জাতিসংঘে বাংলাদেশের 'শান্তির সংস্কৃতি' রেজুলেশন গৃহীত
ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক:
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত 'শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন
সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১৪ জুন) জাতিসংঘে
নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত
বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের
প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন,
'সহিংসতা ও সংঘাত উত্তরণে সংলাপ ও সম্প্রীতির মাধ্যমে শান্তির সংস্কৃতি
গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি।' যুক্তরাষ্ট্রের
বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার প্রথমবারের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ
সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর
বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন
এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে আসছে।
সম্প্রতি
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়।
ন্যায়বিচার, সাম্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের
মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করার জন্য
শান্তির সংস্কৃতির রূপান্তরমূলক ভূমিকার উপর আলোকপাত করা হয় এই উচ্চ
সভাটিতে।
এবারের রেজুলেশনটি বিশ্বব্যাপী নানাবিধ ঝুঁকি এবং
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় সকল সদস্য রাষ্ট্র ও
সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর আলোকপাত করে।
এটি সর্বস্তরে
প্রতিরোধমূলক কূটনীতি ও সংলাপ জোরদার করার ওপর জোর দেয়। সংঘাত প্রতিরোধ ও
সমাধানে নারীর অগ্রণী ভূমিকার পুনর্ব্যক্ত করে এটি এই ধরনের প্রক্রিয়ায়
নারীদের পূর্ণ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া,
রেজুলেশনটি সহিংসতা এবং সংঘাতের অন্তর্নিহিত কারণসমূহ চিহ্নিত করে তা
মোকাবেলা করার এবং চলমান ডিজিটাল রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে শান্তির
সংস্কৃতিকে আরো উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।
রাষ্ট্রদূত
মুহিত বলেন, সময়ের সাথে সাথে রেজুলেশনটির প্রাসঙ্গিকতা বহুগুণে বেড়েছে, এর
ফলে জাতিসংঘের প্রধান প্রধান কার্যাবলীতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি
বৃহত্তর পদচিহ্ন রাখতে পেরেছে এবং একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী রেজুল্যুশনে
পরিণত হতে পেরেছে। রাষ্ট্রদূত মুহিত আরও বলেন, “দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক
নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত যা
বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘ সনদের দায়বদ্ধতার পরিপূরক হিসেবেও ভূমিকা
রেখে চলেছে”।
এবছর ১০০ টির বেশি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে
কো-স্পন্সর করেছে যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণা এগিয়ে নিতে একটি ব্যাপক
সমর্থন। রেজুল্যুশনটির প্রতি অব্যাহত এই সমর্থন এবং প্রতিবছর সর্বসম্মতভাবে
এটি গ্রহণ, শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের বিশাল আস্থারই সাক্ষ্য বহণ করে।
No comments