ব্রিজ কান্ড! টাঙ্গাইল পৌর মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    ব্রিজ কান্ড! টাঙ্গাইল পৌর মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

    নিজস্ব প্রতিনিধি:

    ব্রিজ নির্মাণে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

    ব্রিজ কান্ড! টাঙ্গাইল পৌর মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

    দুদক টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো. বিপ্লব হোসেন বাদি হয়ে মঙ্গলবার (২ জুলাই) এই মামলা দায়ের করেন।

    মামলার অন্য পাঁচ আসামী হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রীজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি’র (জেভি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, এলজিইডি’র টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী) একেএম রশিদ আহম্মদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সাময়িক বরখাস্তকৃত সহকারি প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ ও সাময়িক বরখাস্তকৃত উপসহকারি প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক। তাদের বিরুদ্ধে পারস্পারিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭৩ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

    মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (টিপিআইআইপি) আওতায় এলজিইডির অর্থায়নে টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়। ৪০ মিটার দীর্ঘ এই আর্চ সেতুটি নির্মাণ কাজের জন্য ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রীজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি (জেভি) নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর চুক্তিপত্র হয়। তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮৪১ টাকা ব্যয়ে এই সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর। ২০২২ সালের ১১ মে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর চারটি বিলের মাধ্যমে ঠিকাদারকে দুই কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৬ টাকা প্রদান করা হয়।

    মামলায় বলা হয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী কোন ঝুঁকি না নিয়ে ঢালাই কাজ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেন। ২০২২ সালের ১৬ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু গার্ডার ও ক্রস গার্ডার এবং দুই দিন পর ১৮ মে ডিক স্লাব ঢালাই করেন। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তরিগরি করে ২০২২ সালের ২৬ মে চতুর্থ চলতি বিলের জন্য আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে মেয়র এসএম সিরাজুল হক নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারি প্রকৌশলী রাজিব কুমার গুহ এবং উপসহকারি প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক প্রত্যয়ন করেন দরপত্রের শর্ত মোতাবেক সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের মান সন্তোষজনক হওয়ায় ঠিকাদারকে চতুর্থ বিল বাবদ ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৪ টাকা পরিশোধ করা যেতে পারে বলে সুপারি করেন। সে মোতাবেক প্রকল্প পরিচালক ওই বছরের ৬ জুন চতুর্থ বিলটি পরিশোধ করেন। এরপর ওই বছর ১৬ জুন নির্মাণাধীন সেতুটি ধ্বসে পড়ে।

    মামলায় আরও বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংগৃহিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেতুটি নির্মাণ কাজে যতেষ্ট অবহেলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নকশা অনুসরণ না করে কাজ করলেও পৌরসভার প্রকৌশলীরা কাজ বন্ধ না করে দায়িত্বে চরম অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। পৌরসভার মেয়র প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোন প্রদক্ষেপ নেননি। নিরপেক্ষ প্রকৌশলী কর্তৃক পরিমাপের সময় চতুর্থ বিলে গার্ডার ও স্লাবের বিল বাবদ পরিশোধিত ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৪ টাকার কাজ দৃশ্যমাণ পাওয়া যায়নি বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

    এরআগে গত ২৬ জুন পৌর মেয়রসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য জানা যায়। বর্তমানে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। 

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728