মধুপুরে বিরল রক্তচন্দন গাছ দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড় - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    মধুপুরে বিরল রক্তচন্দন গাছ দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড়

    মো. নজরুল ইসলাম:

     টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিরল প্রজাতির রক্তচন্দন (লাল চন্দন) গাছের সন্ধান মিলেছে। বনাঞ্চলের দোখলা বন বিশ্রামাগারের সামনে অবস্থিত গাছটি এক নজর দেখতে দর্শনার্থীরা ভীড় করছেন। প্রায় ৪০ বছর আগে গাছটি লাগানো হলেও এটি মানুষের দৃষ্টিতে আসেনি। 

    মধুপুরে বিরল রক্তচন্দন গাছ দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড়

     

     এর আগে গাছটি না চিনলেও বর্তমানে আল্লু অর্জুনের সিনেমা ‘পুষ্পা’ মুক্তির পরপরই এটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। মুখে মুখে গাছটির কথা ছড়িয়ে পড়েছে এ অঞ্চলে। তারপর কয়েক মাস ধরে দুর্লভ এই গাছ দেখতে লোকজনের আগ্রহ বেড়েছে। 


    বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বনাঞ্চলের দোখলা এলাকায় বন বিশ্রামাগারের সামনেই এই রক্ত চন্দন গাছটি অন্তত ৪০ বছর আগে লাগানো হয়েছিল। কয়েক মাস আগপর্যন্তও বনাঞ্চলের অন্য সাধারণ গাছগুলোর মতোই এটিকে সাধারণ গাছ মনে করত মানুষ। ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘পুষ্পা’তে লাল চন্দনগাছ নিয়ে নানা কাহিনি দেখার পর এটি এ এলাকার মানুষের নজরে আসে। গাছটিতে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করলে মানুষের রক্তের মতো কষ বের হয়। 


    সরেজমিনে দেখা যায়, গাছটি দেখতে এসেছেন কয়েকজন। তাঁদেরই একজন মেহেদী হাসান জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাছটির কথা জানতে পেরে দেলদুয়ার থেকে গাছটি দেখতে এসেছেন। তিনি দুর্লভ এ গাছ দেখার লোভ সামলাতে পারেননি।


    কালিহাতীর হাতিয়া যমুনা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আখতার হোসেন খান বলেন, ধারণা করা হয় ভারত উপমহাদেশের একমাত্র রক্ত চন্দন গাছ এটি। দোখলা রেস্ট হাউজের সামনের এই গাছ থেকে রক্ত ঝরে কি- না তাই দেখতে শত সহস্র ছিদ্র করেছে পর্যটকরা। বেড়িয়েছে লাল লাল রক্ত। দর্শনার্থীরা গাছটির ফুল-ফল বা বীজ না হওয়ায় ভিন্ন উপায়ে বংশবিস্তারের দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
    মধুপুরের মদন গোপাল দেব বিগ্রহ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার আর্য্য জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিভিন্ন পূজা–পার্বণে এই রক্ত চন্দন ব্যবহার করেন। তাই এটিকে পবিত্র গাছ হিসেবে গণ্য করা হয়। পবিত্র গাছটি দেখার জন্য তিনি এসেছেন।


    বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, উৎসুক লোকজন এসে গাছটিতে খুঁচিয়ে এর লাল কষ বের হওয়া দেখতেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসতে থাকেন এখানে। পরে গাছটি রক্ষা করার জন্য এর চারপাশে নেটের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বংশবিস্তারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কে বা কারা এই গাছটি রোপণ করেছিলেন, এর কোনো তথ্য বন বিভাগের কাছে নেই। রেস্টহাউসের সাবেক এক রক্ষণাবেক্ষণকারী  জানিয়েছেন, ৪০ বছর আগে গাছটি লাগানো হয়েছিল।


    টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, এই মহামূল্যবান চন্দনগাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে এর বংশবিস্তারে উদ্যোগ নেওয়া হলে তিনি প্রয়োজনীয় সব রকম সহযোগিতা করবেন।


    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728