ইসলামের দৃষ্টিতে মাদক দ্রব্যের কুফল এবং প্রতিরোধে ইমামদের করনীয় - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    ইসলামের দৃষ্টিতে মাদক দ্রব্যের কুফল এবং প্রতিরোধে ইমামদের করনীয়

     

    ভূমিকা : বর্তমান পৃথিবীতে যত জটিল ও মারাত্মক সমস্যা রয়েছে তন্মধ্যে মাদক দ্রব্য আর মাদকাসক্তি হল সবার শীর্ষে মাদকের ভয়ংকর থাবায় আজ বিশ^ ব্যাপী বিপন্ন মানব সভ্যতা। এর সর্বনাশা মরণ ছোবলে আমাদের প্রীয় জন্মভূমি বাংলাদেশ দ্রুত ধ্বংসের দিকে ধাপিত হচ্ছে। ভেঙ্গে পরছে অসংখ্য পরিবার। বিঘিœত হচ্ছে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন। বৃদ্ধি পাচ্ছে চোরাচালানসহ মানবতাবিধ্বংসী অসংখ্য অপরাধ। মাদকা সক্তির কারনে সকল জনপদেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুন, দর্ষন ও সন্ত্রাস বেড়ে গিয়ে মানুষের জানমাল আর নিরাপত্তা ব্যাপক ভাবে বিষিœত হচ্ছে। মূলত সমাজের অধিকাংশ অপরাধের জন্য মূখ্য ভাবে দায়ী এই মাদকতা।

    ইসলামের দৃষ্টিতে মাদক দ্রব্যের কুফল এবং প্রতিরোধে ইমামদের করনীয়

    ইসলামের দৃষ্টিতেমাদকতা : ইসলাম সকল প্রকার মাদকতথা নেশাদার দ্রব্য হারাম ঘোষণা করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছে, ‘প্রত্যেক নেশাদার দ্রব্যই মদ আর যাবতীয় মদই হারাম’। আলোচ্য প্রবন্ধে ইসলামের দৃষ্টিতে মদকতা ও এর প্রতিকারের উপায় আলোচনা করাহল-

    আভিধানিক অর্থ : মাদক দ্রব্যের আরবী প্রতিশব্দ ‘খমর’। এর অর্থ- সমাচ্ছন্নকরা, ঢেকে দেয়া। এই সকল অর্থের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারনেই মদ ও শরাবকে ‘খমর’ বলা হয়।

    পারিভাষিক অর্থ : ‘যে সকল বস্তু সেবনে মাদকতা সৃষ্টি হয় এবং বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে অথবা বোধ শক্তির উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে তাকে মাদক দ্রব্য বলে। এই মর্মে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী: ‘মদ বা মাদকদ্রব্য তাই, যা জ্ঞান-বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে’।

    মোট কথা নেশা দায়ক পদার্থ বা মাদক বামাদক দ্রব্য বলতে এমন বস্তু সমূহকে নির্দেশ করা হয় যা শরীরে প্রবেশ করলে কিছু ¯œায়বিক প্রতিক্রিয়ার উদ্রেক ঘটে এবং বারবার এ সকল দ্রব্য গ্রহনে আগ্রহ জন্মায়।

    যেমন: হেরোইন, কুকেন, ইয়াবা, আফিন, গাঁজা ফেনসিডিল, চরস, ভাঙ, তাড়ি, বিভিন্ন প্রকার ঘুমের ঔষুধ, জুতায় লাগানো আঠা, তামাকজাত দ্রব্য ইত্যাদি।

    ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ করণের ক্রমধারা : মাদক দ্রব্যের ব্যবহার প্রাচীন যুগ থেকে চালুছিল। তবে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার ছিল জাহেলী যুগে। তৎকালে আরবে মদ পান করাকে আভিজাত্যের প্রতীক মনে করত। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যখন পবিত্র কোরআন নাযিল হচ্ছিল তখনও মদ সমগ্র আরবে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিছিন্ন অংশ ছিল। কিন্তু ইসলামী শরীআত শুরুতেই মদ হারাম ঘোষনা করেনি বরং ৩টি পর্যায়ে এটি এমনভাবে নিষিদ্ধ করনে পর্যায়ক্রমিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছিল যাতে আজীবনের অভ্যাস ত্যাগ করা মানুষের পক্ষে এর থেকে বিরত থাকা সহজতর হয়।

    প্রথম পর্যায় : শুরুতে মদের অপকারিতা ও পাপ সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা হয়েছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন-

    তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে,বলুন- এর মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে তবে এগুলোর পাপ উপকারী অপেক্ষা অনেক বড়। (বাকারা- ২১৯)

    দ্বিতীয়পর্যায় : দ্বিতীয় পর্যায় নামাজের মধ্যে মদকে হারাম ঘোষনা করা হয়।

    “হে ইমানদার গন! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন ছালাতের ধারে কাছেও যেওনা। যতক্ষন না বুঝ তোমরা যা বলছ” (সূরা নিসা-৪৩)

    তৃতীয় পর্যায় : মদকে চিরতরে হারাম ঘোষনা করে মহান আল্লাহবলেন-

    “হে মুমিনগন! মদ,জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরাব সমূহ শয়তানের কার্য বৈ কিছু নয়। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাক, যাতে তোমরা কল্যান প্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পারস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্ধেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরন ও সালাত থেকে তোমাদের বিরত রাখতে সুতরাং তোমরা কি নিবৃত্ত হবে”। (মায়েদা- ৯০,৯১)

    হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি এক মজলিসে মদ পরিবেশনের কাজ সম্পাদন করছিলেন। আবু তালহা, আবু উবাইদা, উবাই ইবনে কাব, সুহাইল (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীগন সেই মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। একজন প্রচারকের মদ নিষিদ্ধের ঘোষনা কানে পৌছার সাথে সাথে সবাই সমস্বরে বলে উঠেন এ সমস্ত শরাব ফেলে দাও এবং সকলে স্ব স্ব পেয়ালা, মটকা, হাড়ি ভেঙ্গে ফেলো।

    মদ পানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবেনা : “রাসুল (সাঃ) বলেছেন- সর্বদা মদ পানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না”

    মদ পান কারীর ৪০ দিনের সালাত কবুল হবে না : আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি নেশাদার দ্রব্য পান করবে আল্লাহ তার ৪০ দিন সালাত কবুল করবেনা। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তা হলে সে জাহান্নামে যাবে। যদি তওবাহ করে আল্লাহ তার তওবাহ কবুল করবেন। এই ভাবে তিন বার করে তওবাহ করলে তাহলেও আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। যদি সে ৪র্থ বার মদ পান করে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন“রাদাগাতুল খাবাল” পান করাবেন। সাহাবীগন জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) রাদাগাতুল খাবাল কী? নবীজি বললেন- আগুনের তাপে জাহান্নামীদের শরীর থেকে গলে পড়া রক্তপূজ মিশ্রিত গরম তরল পদার্থ।

    মদের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তির প্রতি রাসুল (সাঃ) এর অভিসম্পদ : মদের সাথে সম্পর্ক রাখেন এমন দশ শ্রেনীর ব্যক্তির প্রতি রাসুল(সাঃ) অভিশাপ করেছেন- ১। যে লোক মদের নির্যাস বের করেন। ২। মদ প্রস্তুতকারী ৩। মদ পানকারী ৪। যে মদ পান করায় ৫। মদের আমদানীকারী ৬। মদ বিক্রেতা ৭। মদ ক্রেতা ৮। সরবরাহ কারী ৯। যার জন্য আমদানীকরা হয় ১০। লভ্যাংশ ভোগকারী।


    মাদকাসক্তির কারনঃ মাদকাসক্তি বর্তমানে সব চেয়ে জটিল সমস্যা। এক দিনে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। যে সকল কারনে মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েতানি¤েœ উল্লেখ করা হল-

    ১। ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব, ২। রাষ্ট্রীয় কঠোররীতি নীতির অভাব অথবা দু’মুখেনীতি ৩। মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা ৪। আদর্শ বিচ্যুত হওয়া ৫। অভিভাবকদের অসচেতনতা ৬। পারিবরীক অশান্তি ৭। আসক্ত বন্ধুদের প্রভাব ৮। অনলাইন আসক্তি ৯। হতাশা ও ব্যর্থতা ১০। অসৎ সঙ্গ ১১। অপসংস্কৃতির প্রভাব ১২। রাজনৈতিক প্রভাব ১৩। শিক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটি ১৪। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠানের নিস্ক্রিয়তা ১৫। দেশের সুইপার ও উপজাতী শ্রেনী বা দেশে অবস্থানকারী বিদেশী প্রভুদের মাদক ব্যবহারে অনুমতি প্রদান।

    মাদকের ভয়াবহতাঃ বিশে^র সাথে তালমিলিয়ে আমাদের দেশেও মাদকের ভয়াবহতা আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতা, এমপি, মন্ত্রিদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে ভারত ও বার্মার থেকে এ দ্রব্য প্রবেশ করছে। বাংলাদেশের সিমান্তে ১ ডজনের উপরে মাদক কারখানা স্থাপন করা হয়েছে যার উৎপাদিত সকল মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো এদেশের ভবিষৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করা।

    সরকারী মাদক অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট মাদকাসক্তের ৯০ শতাংশই কিশোর যুবক ও ছাত্র-ছাত্রী।

    মাদকের ভয়াবহতার প্রতিক্রিয়ার ইংল্যান্ডের সাবেক প্রধান মন্ত্রী গ্লাডস্টোন বলেন- ‘যুদ্ধ, মহামারী, দুর্ভিক্ষ এই তিনিটির প্রভাবে যা ক্ষতি হয় তা থেকে অনেক বেশী ও ভয়ংকর ক্ষতি হয় মাদকে’।

    মাদকের ক্ষতিকরদিক : মাদকদ্রব্য বিষয়ক গবেষকগন মদের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক বলতে গিয়ে নি¤েœাক্ত বিষয় গুলোতুলে ধরেছেন-

    ১। শারীরি কক্ষতিঃ মাদক দ্রব্য সেবনে সবচেয়ে মারাতœক ক্ষতি হলো মানুষের শারীরীক ক্ষতি। যে কারনে একজন মানুষ আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মাদক দ্রব্য সেবনে মানুষের নি¤েœাক্ত দৈহিক ক্ষতি হয়।

    * লিভার প্রসারিত হওয়া।* যৌন শক্তি কমে যায়। * স্মরন শক্তি কমে যায়। * হজম শক্তি কমে যায়। * হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া। * সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পায়। * প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস। * লিভার ও ব্লাড ক্যান্সারের আক্রান্ত। * ঔরসজাত সন্তান বিকলাঙ্গ। * দৃষ্টি শক্তি কমে যায়।

    ২। মানসিক ক্ষতি : মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের অন্যতম আরেকটি ক্ষতি হলো মানসিক ভারসাম্যহীনতা। যে কারনে আপন জনকেও চিনতে পারেনা। ফলে পারিবারে অশান্তি নেমে আসে এছাড়া অন্যান্য মানসিক ক্ষতি গুলো হলো-

    * পাগলামী করা * নিজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা * উদ্বিগ্ন ও হতাশা গ্রস্থ হওয়া * অমনোযোগীতা * মাথা ঘোরা * চিত্তবৈকল্যতা * অনিদ্রা * খিটখিটে মেযাজ ও অলসতা * আপন জনদের প্রতি অনাগ্রহ ও ¯েœহ-ভালোবাসা কমে যাওয়া।

    ৩। পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষতিঃ মাদকাসক্তের সর্বাপেক্ষা মারাত্মক ক্ষতি হলো পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে। কারন যে পরিবারে মাদকাসক্তি ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ঘটে সে পরিবারে কোনসুখ-শান্তি থাকেনা। দিবা-রাত্রি সেখানে মারামারি, কাটাকাটি লেগেই থাকে। নেশার অর্থ যোগানের জন্য আসক্ত ব্যক্তি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ সকল প্রকার অপতৎপরতা চালিয়ে সমাজ এবং পরিবারকে অশান্ত আর চরম ভাবে বিপর্যস্ত করে তুলে। যার বাস্তব উদাহরণ পুলিশ দম্পতীর সন্তানঐশী।

    ৪। অর্থনৈতিক ক্ষতি : মাদকদ্রব্য উৎপাদন ও সেবনে এখন কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। বিশ^ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী প্রতি বছর কেবল তামাকের কারনেই ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। ঢাকায় একটি মানসিক হাসপাতালে জরিপ চালিয়ে দেখা যায় রোগিদের প্রতি ৬ জনের ১ জন হেরোইন খোর এদের দৈনিক সেবনের জন্য ব্যয় হয় ২০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। আন্তর্জতিক স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়- বর্তমান বিশে^ সিগারেট কেনার পেছনে যে অর্থ ব্যয়করা হয় এর দুই-তৃতীয়াংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে বিশে^র প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনীতা পূরন করা অবশ্যই সম্ভব হবে।

    মাদক নিয়ন্ত্রনে ইমামদের করনীয় : মুসলিমদের ঐক্যের সুতিকাগার হলো মসজিদ। 

    মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও সিনাগগের মতো মসজিদ কেবল গতানুগতিক কোন উপসনা গৃহ নয় বরং মসজিদ হলো সকল ভাল কাজের জনমত তৈরীর কারখানা তথা মুসলিম উম্মার নিউক্লিয়াস। আর মসজিদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি হলেন ইমাম সাহেব। একটি আলোকিত সমাজ বিনির্মানে তিনিই হলেন মূল কারিগর। সমাজে কী চলছে, কী সমস্যা বিরাজমান, তাত্বরিত গতিতে চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনই হবে ইমাম সাহেবের অন্যতম প্রধান কাজ। সেহেতু বর্তমান সমাজের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো মাদকতা যা নিয়ন্ত্রনে ইমাম গন নি¤েœাক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেন। 

    জুমার খুদবার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি : জুমার খুতবায় ইমামগন ইসলামের দৃষ্টিতে মাদকের অপকারিতা সমন্ধে জনগনকে অবহিত করতে পারেন। যাতে ইসলামের বিধি-বিধান সমূহ পালনে তারা আগ্রহী হয়। মাদক গ্রহণের ক্ষতি কর বিষয় সম্বন্ধে শারীরিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় দিক গুলো তুলে ধরে সচেতনতা সৃষ্টি করবেন। মাদকের ক্ষতি ও অপকারিতা সম্বন্ধে অবহিত হলে প্রতিটি জনগনের মধ্যে এই বদাভ্যাস ত্যাগ করা ও এর প্রতি ষৃণা জন্মানো সহজ হবে।

    মক্তব্যের মাধ্যমে ইসলা মিশিক্ষার প্রসার : মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী মাদকাসক্তদের মধ্যে ৯০% হলো শিশু কিশোর ও ছাত্র-ছাত্রী। মক্তব্যের মাধ্যমে শিশু কিশোরদের মাঝে ইসলামি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারলে শিশুকাল থেকেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভুতি জাগ্রত হবে। ফলে মাদক বর্জন করা সহজ হবে।

    সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা : ইমাম সাহেবের ভলিষ্ঠ নেতৃত্বে মসজিদ কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে সামাজিক ভাবে মাদক প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে পারেন। যে কমিটি নিজেরা মাদক মুক্ত থেকে এবংতাদের প্রভাব খাটিয়ে সমাজে সকল প্রকার মাদকের প্রতিরোধ করবে। 

    সজিদ মুখি প্রজন্ম গড়ে তোলা : সমাজ থেকে মাদক প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শিশু-কিশোরদের কে মসজিদে জামাতের সাথে নামাজ পড়ার উৎসাহিত করা। ফলে মসজিদ মুখি নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে। যার ফলে সমাজ মাদক মুক্ত থাকবে।

    ইসলামি সাংস্কৃতি লালনে উৎসাহিত : অপসাংস্কৃতির ছোবলে যুব সমাজ মাদকাসক্তির দিকে ঝুকে পড়ছে। এর বিপরীতে সুস্থ্য সাংস্কৃতি তথা ইসলামি সাংস্কৃতি ধারা ব্যাপক ভাবে প্রসার ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে একজন ইমামের ভূমিকা অপরিহার্য।

    উপসংহার : ইসলাম মানবতার রক্ষা কবচ। ইসলাম মানুষকে দৈহিক, মানসিক, আধ্যাতিক, সামাজিক ও নৈতিক অধঃপতন থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানায়। তাই ইসলাম মানুষের বিবেক বুদ্ধিকে হেফাজতের জন্য মাদক বিরুধী আইন রচনা করেছে। একটি সুষ্ঠ সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মানের জন্য সুস্থ্য মস্তিস্ক একান্ত প্রয়োজন। আজ মাদকাসক্তি বিশ^ মনবতার জন্য এক ভয়াবহ অভিশাপ। এটি অসংখ্য পাপকার্য, অপরাধ ও অসামাজিক কর্মকান্ডের মূল। আল্লাহ আমাদের যাবতীয় মাদক দ্রব্য পরিহার করে মাদক মুক্ত আদর্শ সমাজ গড়ার তৌফিক দান করুক। আমিন!!


    মোহাম্মদ আলআমিন চৌধুরী

    প্রভাষক, ইসলামি স্টাডিজ বিভাগ,

    সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়

    টাঙ্গাইল।


    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728