৪০ বছরেও পাকা ভবন হয়নি ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসায়
তাইবুর রহমান,সখীপুর:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ৪০ বছরেও পাকা ভবন নির্মিত হয়নি। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের একমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা। বিগত ১৯৮৪ সালে অত্র মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয়দের প্রয়োজনের তাগিদে এলাকায় আর কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকায় ইসলামী শিক্ষাকে আরও প্রসারিত করতে স্থানীয় বিশিষ্ট ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহায়তায় মাদ্রাসার অগ্রগতি হতে শুরু করে।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ফলাফলে সন্তোষজনক অবস্থান থাকলেও সরকারি কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম। জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের উপযোগী কোনো পরিবেশ নেই। ১৯৮৬ সালে মাদ্রাসাটি সরকারি অনুদানভুক্ত (এমপিও) হয়। বর্তমানে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
মাদ্রাসার একাধিক ছাত্র-ছাত্রী জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ভবন না থাকায় পড়াশোনা করতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়াও শ্রেণি কক্ষের মেঝে কাঁচা থাকায় ধুলোবালিতে ক্লাশ করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয় ।
অত্র মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র সখীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইকবাল গফুর জানান, দীর্ঘদিনের পুরোনো প্রতিষ্ঠান এটি। এতোদিনেও পাকা ভবন না হওয়ায় বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি মাদ্রাসাটিতে যেন দ্রুত পাকা ভবন করা হয়।
অত্র মাদ্রাসা সাবেক সুপার মাওলানা মোহাম্মদ আলী আজাদ জানান, আমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সুপারের দায়িত্ব পালন করেছি । মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পার হয়ে গেছে। ফলাফলে সাফল্য অর্জন করার পরেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
মাদ্রাসাটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হাই বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে মাদ্রাসাটি সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হলেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সরকারি বরাদ্দে কোনো পাকা ভবন না থাকায় জরাজীর্ণ টিনের ঘরে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সামান্য বৃষ্টিপাত হলে পাঠদানের উপযোগী থাকে না।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি এমএ এ হাকিম বলেন, ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে। এতে অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো সরকারি অর্থ বরাদ্দ নেই। জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের বসে শিক্ষাগ্রহণ করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হারুন অর রশিদ বলেন,পর্যায়ক্রমে সকল প্রতিষ্ঠানে পাকা ভবন হচ্ছে । ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসায়ও দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা ভবন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদ্রাসাটিতে পাকা ভবন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments