মধুপুর শালবনের ইতিকথা - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    মধুপুর শালবনের ইতিকথা

    মো.নজরুল ইসলাম : 

     

    হাজার বছরের প্রাচীন মধুপুর শালবন। ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি বনাঞ্চলের পর বাংলাদেশের তৃতয়ি বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন মধুপুর শালবন। এ বনকে দেশের মধ্যাঞ্চলীয় বনভূমি হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এ বনের বিস্তৃতি গাজীপুর টাঙ্গাইল ও মোমেনশাহী জেলার অংশজুড়ে। একসময় রাজধানী ঢাকার কাঁটাবন পর্যন্ত এ বনের সীমানা থাকলেও আজ তা শুধুই অতীত, বইয়ের পাতায় লেখা ইতিহাস। টাঙ্গাইল ও মোমেনশাহী জেলার অংশটুকু মধুপুর গড় বা শালবন নামে পরিচিত। শালগাছের মোলা বা শিকড় থেকে গজানো চারায় গাছ হয় বলে স্থানীয়রা একে গজারী বনও বলে থাকে।

    মধুপুর শালবনের ইতিকথা
     

    যেমন ছিল শালবন : মধুপুর শালবন একসময় অসংখ্য বড় বড় বৃক্ষ লতাপাতা আর বন্য প্রাণীতে ভরপুর ছিল। ষাটের দশকেও মধুপুর বনে প্রবেশ করতেও গা ছমছম করতো, বনকে ঘিরে মানুষের বসতি বাড়ার সাথে সাথে উজার হতে থাকে গাছপালা। একই সাথে দখলদারদের কবলে পড়ে এই মধুপুর বনভূমি। টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইল, সখীপুর এবং মোমেনশাহীর মুক্তাগাছা ও ফুলবাড়িয়ার কিছু অংশ নিয়ে প্রায় ৬২ হাজার ৫শ' একর বনভূমি রয়েছে। এর মধ্যে কাগজে-কলমে মধুপুর শালবনের আওতায় ৪৫ হাজার ৫শ' ৬৫ দশমিক ৩৮ একর বনভূমি। 


    ১৯৮৮ সালে মোমেনশাহী থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনভূমিকে আলাদা করা হয়। একা কেউ এ বনে প্রবেশ করার সাহস করতো না। দল বেঁধে প্রবেশ করতে হতো। কারণ প্রাকৃতিক পরিবেশে নিরাপদে আশ্রয় নিতে চিতা বাঘ, বাঘডাস, জঙ্গলী শুকর, বিষাক্ত সাপ, পাখ-পাখিরা বনের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে বাস করতো। বনে মায়া হরিণ ও চিতল হরিণ প্রচুর ছিল। একসময়ে গোটা এলাকাতেই বানর বা হনুমান দেখতে পাওয়া যেত । অন্যান্য প্রাণির মধ্যে লেপার্ড, বন বিড়াল,শিয়াল , সজারু, খরগোশ, উদ , গুইসাপ ও বন মোরগের লক্ষণীয় বিচরণ ছিল। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ঘোরা-ফেরা ছিল চোখে পড়ার মত। পাখির কল কাকলিতে মুখরিত ছিল গোটা শালবন। বনের ফুল  ফল খুবই লোভনীয়, আর ছোট বড় গাছে মৌমাছিরা বাসা বাঁধত। প্রচুর পরিমাণে মধু উৎপাদিত হতো এই বনে। অনেকের ধারনা মতে মধুপুর বনের মধু থেকেই এ অঞ্চলের নামকরণ মধুপুর হয়েছে।

    মধুপুর শালবনের ইতিকথা
     

    বিলুপ্ত জীব বৈচিত্র্য : জীব বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ মধুপুর শালবনে এক সময় ৬৩ প্রজাতির গাছ ছিল। বনের সবচেয়ে মূল্যবান গাছের নামেই বনটির পরিচিতি পায় ‘শালবন' নামে। বুনোডুমুড়, মনকাটা, জঙ্গলী খেজুর, দামন, তিতিজাম, কাশিগোটা, তিতফল, দুধকুরুজ, শতমূল, জারুল, পলাশ, তুফা, নাসিন ও গান্ধী গজারীর মতো দেশীয় প্রজাতির গাছ ছিল। যার অনেকগুলোই ওষুধি গাছ। ফালগুন মাসে শাল গাছের ফুটন্ত ফুলের মৌ মৌ গন্ধে বন এলাকার বাতাস সুবাসিত হয়ে উঠতো। এ সময়ে গড় অঞ্চলের বসবাসরত মানুষের শরীর গরম  হতো এবং তন্দ্রা ও আলস্যে যেন হাবুডুবু খেত। এই শরীর গরমকে স্থানীয় ভাষায় গজাইরা জ্বর বলা হতো।

     গজাইরা জ্বর থেকে রক্ষা পেতে এ সময় মা-ঝিয়েরা সন্তানদের নিয়ে দূরের কোন আত্মীয়ের বাড়িতে ১৫-২০দিন কাটিয়ে আসতো। এছাড়া এ সময় বনে প্রচুর পরিমাণ বেহুর ও আনাইগোটার গাছ ছিল। বেহুর ও আনাই গাছের সুমিষ্ট গোটা (ফল) এ বনের ছিল আরেক ঐশ্বর্য। গড়াঞ্চলের কিশোরের দল বেহুর ও আনাই গোটা খেতে বনে যেত। দূরন্ত কিশোররা গলায়, মাজায় ও হাতে সূতা দিয়ে বেহুরগোটার মালা গেঁথে ঘুরে ঘুরে ছিড়ে খেত। এ যেন ছিল প্রতি বছরের একটি প্রথা। এখন তা শুধুই গল্প কথা। অপরদিকে মধুপুর বনের  শাল গজারী গাছের খুঁটি ফ্রেম দিয়ে ঘর নির্মাণ ছিল এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যগত অভ্যাস।


    বনের সফল নারী: হাজারো হতাশার মধ্যে এক আদিবাসি গারো নারী ভেষজ চাষের জগতে এক ব্যতিক্রম প্রয়াস চালিয়ে সফল হয়েছেন। তিনি এখন সফলতার প্রতীক। ভেষজ চাষের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন এবং বিলুপ্তপ্রায় লোকায়ত চিকিৎসা পুনর্বহাল করে তিনি সকলের প্রশংসা অর্জন করেছেন। এ কৃতি নারীর নাম নির্মলা হাদিমা। বাড়ি মধুপুর উপজেলার বন সমৃদ্ধ গ্রাম টেলকিতে। 


     বন উজাড়ের চরম দৃশ্য দেখে মন কেঁদে উঠে নির্মলা হাদিমার। তিনি বুঝতে পারেন বন উজাড়ের সাথে সাথে ভেষজও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এ অবস্থা দেখে এক দশক আগে মধুপুর বন এলাকার টেলকি গ্রামের আদিবাসী গারো নারী নির্মলা হাদিমা শুরু করেন ভেষজ চারা সংগ্রহ ও উৎপাদনের কাজ। তাকে সহযোগিতা করেন ঢাকা উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী ছাত্র রবি খান। কিভাবে হারিয়ে যাওয়া ভেষজ বৃক্ষের সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যায় তা নিয়ে ভাবনার এক পর্যায়ে মধুপুর বনে ঘুরে হাতে গুনা কয়েকটি ভেষজবৃক্ষ খুজে পেয়ে ব্যাপক খুশি হন। 

    বেড়ে যায় তার আগ্রহ। এরপর ভেষজের সন্ধানে মধুপুর বন চষে বেড়ান।এভাবে কয়েক মাসের ব্যবধানে নির্মলার বাড়িতে সংগ্রহ করা ভেষজের গাছগুলো রোপন শুরু করে। বাড়তে থাকে চাষ। সংগ্রহ ও সংরক্ষণ যেন তাদের নেশায় পরিণত হয়। এভাবে ধীরে ধীরে টেলকির বন এলাকার সবুজ পল্লী প্রকৃতির নির্মলা হাদিমার বাড়ির আঙ্গিনা ভেষজে ভরে উঠে। এখন বাগান দোখলায় স্থানান্তরিত করেছেন। বর্তমানে নির্মলা হাদিমার বাগানের ৬ শ প্রজাতির ভেষজ চারা উৎপাদন করা হয়েছে। ২০-৩০ জন নারী শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন তার ভেষজ বাগানে।


    জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক : টাঙ্গাইল জেলা সদর থেকে ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে মধুপুর জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক। বনের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল শিক্ষা গবেষণা এবং চিত্তবিনোদনের  উদ্দেশ্যে ১৯৬২ সালে এ জাতীয় উদ্যানটি গড়ে তোলা হয়। পরে ১৯৮২ সালে সরকার এটিকে জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক ঘোষণা করে  কাগজে কলমে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের মোট আয়তন ২০ হাজার ৮শ' ৩৭ দশমিক ২৩ একর। প্রচুর বৃষ্টিপাত ও উর্বর মাটির কারণে এই উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট উদ্ভিদ জন্মায়। 

    নানা প্রজাতির গাছগাছালী ও পর্যাপ্ত খাদ্যের সংস্থান থাকায় বিভিন্ন বন্য প্রাণীরা এখানে খুব সহজেই জীবন ধারণ করতে পারে। লহুরিয়া বিটে একটি মিনি চিড়িয়াখানা রয়েছে। দোখলা ভিআইপি বাংলোর সামনে একটি মিনি শিশুপার্ক রয়েছে। উদ্যানের বৃক্ষরাজির সবুজ শ্যামলিমা প্রত্যক্ষ করার জন্য দোখলা ও লহুরিয়ায় রয়েছে দুটি সুউচ্চ টাওয়ার। একসময়ে পাহাড়প্রেমিক সৌন্দর্যপিয়াসু পর্যটকদের পদভারে মুখরিত থাকতো এই উদ্যান।


    স্থানীয়দের দাবি:
    মধুপুর জাতীয় উদ্যান সবার পদ-চারণায় মুখর হোক। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় এই ঐতিহাসিক বন বেঁচে থাকুক, বন্য প্রাণী বেঁচে থাকুক। দেশের ক্ষয়িষ্ণু বনজ সম্পদের অবশিষ্টের মধ্যে বেঁচে থাকুক এই মধুপুর বনারণ্য, বেঁচে থাকুক মানুষ। তবেই বেঁচে থাকবে একটি ঐতিহ্য মধুপুর গড়।


    পর্যটন ও ঐতিহাসিক স্থানের দিক দিয়ে সকলের কাছে অতি পরিচিত সেই জেলা টাঙ্গাইল। এ জেলায় মধুপুর পিকনিক স্পটটি অবস্থিত। এখানে আরও দেখার মতো স্থান হলো রসুলপুর জাতীয় উদ্যান, দোখলা রেষ্ট হাউজ, পীরগাছা রাবার বাগান ও কাকরাইদ বীজ উৎপাদন খামার।


    সুযোগ-সবিধা: দোখলা নামক স্থাছে দোখলা রেস্ট হাউজ, চুনিয়া কটেজ, বকুল কটেজ, দুটি পিকনিক স্পট, জুই ও চামেলী বাগান। একটি ইউথ হোস্টেল ও একটি সু-উচ্চ টাওয়ার, আছে খেলার মাঠ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, টয়লেট, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এর পাশেই আছে একটি ছোট্ট বাজার, আশে-পাশে আছে আদিবাসীদের পল্লী। সেখানে অবসরে  ঘুরে বেড়ানোতে পাওয়া যায় বিমল আনন্দ। আদিবাসীদের জীবনধারা বিচিত্র। দোখলা পঁচিশমাইল রাসত্মার শেষে জলছত্র এলাকায় আদিবাসীদের নিজস্ব তাঁতে বুনান বিভিন্ন ধরণের রেশম বস্ত্র শিল্পের বিক্রয় কেন্দ্র ‘‘কারিতাস’’।


    ইকোপার্ক : ক্ষয়িষ্ণু মধুপুর শাল বনকে দুর্বৃত্তদের কাল থাবা থেকে রক্ষা করার জন্য বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১০ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরে ইকোপার্ক প্রকল্প গৃহীত হয়। মধুপুর বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষাকল্পে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৩ হাজার একর ভূমিতে বন বিভাগ ইকোপার্ক করার ঘোষণা দেয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৬১ হাজার ফুট দীর্ঘ দেয়াল নির্মাণ করে অভ্যন্তরভাগে ২টি কালভার্ট, ১০টি পিকনিক স্পট, কটেজ, পাখির অভয়ারণ্যের জন্য জলাধারসহ ৯টি লেক, ২টি ওয়াচ টাওয়ার, ৬টি রেস্ট হাউজ, ২টি পানির ট্যাংক, ৬টি রাস্তা এবং জঙ্গলকর্মীদের জন্য ৬টি ব্যারাক নির্মাণের কথা ছিল। 

    আরও বলা হয় ৪০ লাখ টাকার জীবজন্তু ও পাখি কেনা হবে। এসব প্রাণীর জন্য ১০ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হবে। ৩০ হেক্টর জমিতে ঘাস, লিগুম ও কলাগাছ লাগানো হবে। সরকারের ইকোপার্ক ঘোষণার পর স্থানীয় বনবাসী বিশেষ করে গারোরা উচ্ছেদ ও তাদের জীবন-জীবিকা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বিরোধিতা শুরু করে। দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি এনজিও'র উস্কানিতে গারোরা ইকোপার্কের বিপক্ষে তুমুল আন্দোলনে নেমে পড়ে। এ আন্দোলনে তাদের কয়েকজন নেতা নিহত হয়। ইকোপার্ক প্রকল্পের অধীনে বেস্টনী দেয়াল নির্মাণ শুরুর সাথে সাথে গারোদের আন্দোলনের মুখে তা এগুতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ইকোপার্ক প্রকল্পের টাকা বিশ্বব্যাংককে ফেরত দেয়া হয়।


    অন্যান্য প্রকল্পও ব্যর্থ : ইকোপার্ক প্রকল্প ছাড়াও মধুপুর বনকে রক্ষা করতে আরও কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোন প্রকল্পই আলোর মুখ দেখেনি। আবার কোন কোন প্রকল্প পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে। বন উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য ১৯৬৮ সালে মধুপুর বন গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। মধুপুর গড়ের আবহাওয়া ও জলবায়ূর সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশি-বিদেশি উন্নত প্রজাতির ঔষধি ও কাঠ জাতীয় গাছ নিয়ে এর গবেষনা শুরু হয়। কিন্তু ৪৫ বছরে এ গবেষণা কেন্দ্রের ফলাফল একবারে শূন্যের কোঠায়।


    ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যানের ভিতর লহুরিয়া বিটে ২৬ একর বনভূমির চারপাশে বেড়া দিয়ে গড়ে তোলা হয় হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। ২০০১ সালে তৎকালিন সহকারি বনসংরক্ষক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, হরিণ প্রজনন কেন্দ্রে ৫২টি হরিণ রয়েছে। ২০১০ সালে তাদের হিসাব মতে হরিণের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৪টিতে। তবে বাস্তবচিত্র হলো হরিণ প্রজনন কেন্দ্রের হরিণ কেমন তা মধুপুরের মানুষই জানে না। ১৯৮৯-১৯৯৩ সালে সাড়ে চার একর বনভূমি জুড়ে কৃত্রিম বন বাগান (উডলট ও এগ্রিফরেস্ট্রি) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে করা সে বাগানের বেশিরভাগ গাছ লুট ও জায়গা দখল হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে ১৯৯৭ সালের কৃষি বনায়ন ও ২০০০ সালের সামাজিক বনায়ন প্রকল্পও মুখ থুবড়ে পড়ে।


    শালবনের বর্তমান অবস্থা : মধুপুর শালবনের মোটের ৮ ভাগের ৭ ভাগই উজাড় হয়ে গেছে। ১৯৮৮ সালে ৪৫ হাজার ৫শ' ৬৫ একর ভূমিকে মধুপুর শালবন ঘোষনা করলেও ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৩৫হাজার একর বনভূমি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। শুধু ১৯৯০ সালেই বন বিভাগের হিসাব মতে এ বনের ২৮ হাজার ৪শ' ৩৮ দশমিক ৪৭ একর ভূমি বেদখল হয়ে যায়। মধুপুর শালবনের জমি নেই,গাছ নেই, প্রাণী নেই, পাখি নেই মধু নেই এবং ভেষজ নেই। এই নেই এর কবলে পড়ে মধুপুর শালবন এখন ইতিহাস হয়ে কাগজের পাতায় বন্দি।


    যেভাবে ধ্বংস হয় শালবন : প্রথমে বনে বসবাসরত গারোদের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তারা বনের গাছ কাটতে থাকে। এদের দমনের জন্য বনরক্ষকরা বনের গারোদের সাথে কাঁধ মিলিয়ে বন ধ্বংসে মেতে উঠে। আস্তে আস্তে বাহিরের বাঙালি ও প্রভাবশালীরা এই মহাসম্পদের খোঁজ পায়। শুরু হয় যে যার মতো বন দখলের যুদ্ধ। রাজনৈতিক নেতারাও পেশি শক্তি নিয়ে বন ধ্বংস ধ্বংস খেলায় শরীক হন। যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, তখনই যে যার মত করে আখের গুছিয়ে নিয়েছে। পরিশেষে রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতিবাজ বনরক্ষীদের কবলে পড়ে ঐতিহাসিক শালবন বিপন্ন হয়ে আজ নীরবে কাঁদছে।


                                                                                                                  -লেখক : শিক্ষক, সাংবাদিক


    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728