Wednesday, July 5, 2023

পাগলী মা হলেও বাবার খবর নেই !

মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ,মির্জাপুর:


রাস্তার ধারে ছনের আড়ায় ত্রিশোর্ধ এক নারী চিৎকার চেচামেচি ও গড়াগড়ি পাড়তে দেখে এগিয়ে যান প্রাতভ্রমনে বের হওয়া বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মজিরন বেগম (৬৫) সহ আরো দুই নারী। ভালো মতো খেয়াল করলে তারা দেখতে পান অপ্রকৃস্থ অজ্ঞাত এক নারী সেখানে তার সন্তান প্রশসের চেষ্টা করছেন। পরে মজিরন নেছা এগিয়ে গিয়ে সহযোগিতা করে সেখানেই কন্যা সন্তান প্রশব করেন ওই নারী। একেক করে খবর পেয়ে সবাই দেখতে আসেন মা ও  শিশুকে।

পাগলী মা হলেও বাবার খবর নেই !
 

বুধবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ছনের আড়ায় পাগলী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে মা হয়েছেন। বৃদ্ধা মজিরন বেগম বাচ্চাটিকে পাগলীর কাছে দিতে চাইলে সে দুরে সরিয়ে দেয়। পরে সকাল নয়টার দিকে বাচ্চাটিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের কাছে নিয়ে যান তারা। 


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরম মমতায় শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে স্নেহ করেন। এক আবেগঘন পরিবেশে তিনি বাচ্চা শিশুটির দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসার জন্য কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশের সহায়তায় পাগলীকে খুঁজে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন পাগলী প্রসুতি বিভাগে এবং শিশুটি শিশু বিভাগের নিবির পর্যবেক্ষনে আছে। 


মা ও বাচ্চা সুস্থ আছে বলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আলী আহসান জানিয়েছেন।
এদিকে পাগলী মা হয়েছে এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক নারী পুরুষ কুমুদিনী হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে ভীড় করছে। কেউ উৎসাহ নিয়ে শিশুটিকে দেখছে আবার কেউ শিশুটির দায়িত্ব নিতেও হাসপাতালে যাচ্ছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, পাগলীটি কবে মির্জাপুর এসেছে তা কেউ বলতে পারেনি। যে নারী বাচ্চাটিকে ইউএনও অফিসে নিয়ে এসেছে তারাও পাগলীকে এর আগে দেখেননি। নাম জিজ্ঞেজ করলে পাগলী তিনটি নাম বলেছে। হাসপাতালেরর রেজিষ্টার খাতায় নাজমা। পরে আবার জিদলী এবং তিথি নামও বলেছে। পিতার নাম বলেছে মশিউর রহমান, বাড়ি বরিশাল। এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলেনি। তবে হাসপাতালে রেখেই আমরা চেষ্টা করছি পরিচয় জানতে বলে তিনি জানান।
কুমুদিনী হাসপাতালের উপ-মহাব্যবস্থাপক অনিমেষ ভৌমিক বলেন, ইউএনও মহোদয় পাগলী মা এবং নবজাতক শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠান। মা ও  শিশুটি এখন আমাদের তত্ত¡াবধানে আছে এবং তারা সুস্থ আছে। 


এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, পাগলী ওই নারী সঠিকভাবে কথা বলছেনা। আমরা তার সঠিক পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। পরিচয় না পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

Akota Clinik

শেয়ার করুন

0 coment rios: