আঙ্গুর চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সখীপুরের জাহিদুল - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    আঙ্গুর চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সখীপুরের জাহিদুল

    তাইবুর রহমান, সখিপুর:


    জাহিদুল ইসলাম টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার বাড়ি উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে।

     

    আঙ্গুর চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সখীপুরের জাহিদুল

     নিজের জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষ করে অন্যদের উৎসাহিত করছেন। ইউটিউবে আঙ্গুর চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি তার বাড়ির উঠানের অনাবাদি জমিতে আঙ্গুর চাষ করার পরিকল্পনা করেছেন। ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নেতা হিসেবে কর্মরত জাহিদুল ইসলাম প্রথমবারের মতো আঙ্গুর চাষে সফলতা পেয়েছেন। বাড়ির পাশের ২০ শতাংশ জমিতে ৪৯টি আঙুরের চারা রোপণ করে আঙুর চাষ শুরু করেন তিনি।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার আঙুর ক্ষেতে ঝুলছে পাকা রসালো আঙুরের গুচ্ছ। জাহিদুল ও তার কর্মচারীরা কাজ করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা বাগান পরিদর্শন করছেন।

    জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইউটিউবের মাধ্যমে মিষ্টি আঙুর চাষ দেখছি। পরে 2022 সালের রমজানের শুরুতে 22 হাজার টাকায় 49টি চারা কিনে বাড়ির পাশের 20 খাটা জমিতে রোপণ করি। চলতি বছরের রমজানের আগেই ফলন শুরু হয় এক বছরের মধ্যে। প্রতিটি গাছে 20 থেকে 25 কেজি আঙ্গুর হয়। এটি প্রথমবারের মতো আমার ফলন উন্নত করেছে। আমি প্রতিদিন আঙ্গুর ক্ষেত থেকে 80 কেজি তুলে নিই। প্রতি কেজি 200 টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের আঙ্গুর বিক্রি হয়েছে। এ বছর প্রায় ৩ লাখ টাকার আঙুর বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
     

     তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমার বাগানে ৫৭টি আঙ্গুর গাছ রয়েছে। তবে এ বছর লাল, কালো ও সবুজ ৩টি নতুন জাতের আবাদ করেছি। আমরা সাধারণ মানুষকে ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তার স্ত্রী সেলিনা বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সহযোগিতা করছেন।

     জাহিদুল ইসলামের আঙুর ক্ষেত দেখাশোনা করেন তার ভাগ্নে রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, চাচার অবর্তমানে বাগান দেখভাল করছি। আমি বাগানে পানি দেওয়া থেকে শুরু করে অনেক কাজ করি। বাগানের আঙ্গুর মাছি এবং মাকড়সা থেকে রক্ষা করার জন্য মাঝে মাঝে স্প্রে করা প্রয়োজন।

     রাকিব আরো বলেন, আমাদের আঙ্গুর চাষ দেখে আশপাশের গ্রামের অনেকেই আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আঙ্গুর চাষ লাভজনক হতে পারে। আমি নিজেও বাগানের আঙ্গুর ও চারা বিক্রি করি।

    জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, আমার স্বামীর স্বপ্ন ছিল একটি বাগান করে বিষমুক্ত আঙুর খাওয়া। স্বপ্ন পূরণে ইউটিউব ও ঝিনাইদহের রশিদ নামের এক ভাইয়ের পরামর্শে তিনি আঙুর চাষের সিদ্ধান্ত নেন। খেতে খুব মিষ্টি আঙুরের ফলনও হয়েছে খুব ভালো। আমরা দ্রাক্ষাক্ষেত্র আরও বড় করতে চাই।

     বাসাইল উপজেলা থেকে আঙ্গুর ক্ষেত দেখতে আসা দর্শনার্থী শামীম আল মামুন বলেন, আঙ্গুর ক্ষেত আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি ভবিষ্যতে তার মতো আঙ্গুর ফলব।

     টাঙ্গাইল জেলা কৃষি মহা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) নুরুল ইসলাম জানান, জাহিদুল ইসলাম ভারতীয় জাতের আঙুর চাষ করেন। এতে ভালো ফলন হয়েছে। আমরা তাকে সব সময় সমর্থন করছি। তার বাগানের আঙ্গুর সুস্বাদু। তাই বাগানে আসছেন নতুন নতুন আগ্রহী উদ্যোক্তারা।

     তিনি আরো জানান, জাহিদুল ইসলাম ২০ শতাংশ জমিতে বাগান করেছেন। আগামীতে সখীপুরে আরও জমি চাষ করা হবে। সখীপুরের লাল মাটিতে আঙ্গুরসহ নানা ধরনের দেশি-বিদেশি ফলের চাষ হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728