কাল উপজেলা নির্বাচন! কে হচ্ছেন বাসাইলের কর্ণধার - TangailTimes24
  • সংবাদ শিরোনাম

    কাল উপজেলা নির্বাচন! কে হচ্ছেন বাসাইলের কর্ণধার

    নিজস্ব প্রতিবেদক : 

    বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল বুধবার (৫ জুন) অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে পুরো উপজেলাজুড়ে। 

    কাল উপজেলা নির্বাচন! কে হচ্ছেন বাসাইলের কর্ণধার

    বিগত সময়ের চেয়ে এবার নির্বাচনি সমীকরণ ভিন্ন। চেয়ার পূনরায় নিজের দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম। আর নতুন করে চেয়ারে বসতে ব্যাপক তোড়জোড় চালাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউছ ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলামসহ চারজন। চেয়ারম্যান পদের এসব প্রার্থীরা উন্নয়নমূলক নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিভিন্ন কায়দায় ভোট চেয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 


    এবার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম (আনারস) প্রতীকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউছ (মোটরসাইকেল), উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম (দোয়াত-কলম), উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন খান (হেলিকপ্টার) ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন লাভলু (ঘোড়া) প্রতীকে। 


    এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন- বাসাইল প্রেসক্লাবের ৩ বারের সাবেক সভাপতি এম শহীদুল ইসলাম (মাইক) প্রতীকে, সাইফুল ইসলাম (টিউবওয়েল), সাদিকুর রহমান খান (টিয়া পাখি), বিজয় আহমেদ (চশমা), নুরুল ইসলাম খান (উড়োজাহাজ), আতিকুর রহমান (বৈদ্যুতিক বাল্ব) ও মোকছেদ খলিফা (তালা) প্রতীকে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মলি আক্তার (ফুটবল) প্রতীকে, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জবেদা বেগম (প্রজাপতি), রেখা বেগম (কলস) ও শাম্মী আক্তার মুক্তি (হাঁস) প্রতীকে। 


    জানা গেছে, কাজী অলিদ ইসলাম তৃতীয়বার উপজেলা পরিষদের শীর্ষ পর্যায়ের চেয়ারে বসতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তিনি দল থেকে বহিষ্কার হন। এরপর কাজী অলিদ ইসলাম ও হাজী মতিয়ার রহমান গাউছের পক্ষে প্রকাশ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এজন্য উপজেলা আওয়ামী লীগসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্ত শুরু হয়। এই গ্রুপিং প্রকাশ্যে রূপ নেয়। দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানও পৃথকভাবে পালন করা হচ্ছে। এক পক্ষ করছে কাজী অলিদ ইসলামের নেতৃত্বে আর অপর পক্ষ করছে হাজী মতিয়ার রহমান গাউছের নেতৃত্বে। কর্মী ও সমর্থকদের এই দুই প্রিয় ব্যক্তিত্ব একত্রে প্রার্থী হওয়ায় কর্মীসমর্থকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। এজন্য অনেক কর্মী-সমর্থকরা এবারের নির্বাচনে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। 


    আওয়ামী লীগের ভোট দুইভাগে বিভক্ত হওয়ায় কিছুটা বেকায়দায় পড়তে হতে পারে কাজী অলিদ ইসলাম ও হাজী মতিয়ার রহমান গাউছকে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মীই গাউছের পক্ষে কাজ করছেন বলে কর্মীসমর্থকদের দাবি। স্থানীয় সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয় এবারের নির্বাচনে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামকেও এখনও নির্বাচনি মাঠে দেখা যায়নি। তবে সাবেক সংসদ সদস্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমকে কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে নির্বাচনি মাঠে প্রচারণায় দেখা গেছে। কাদের সিদ্দিকী নির্বাচনে মাঠে নামার কারণে অনেকে মনে করছেন গামছার কর্মীসমর্থকদের ভোট কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে পড়বে। তবে গামছার স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীকে কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে কাজ করতে দেখা যায়নি। এজন্য কিছুটা ধোয়াশার মধ্যে রয়েছে এই গামছার ভোট নিয়ে। 



    এদিকে, কাজী অলিদ ইসলামের পুরো উপজেলাজুড়ে ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে একটি ‘ভোট ব্যাংক’ রয়েছে। এই ‘ভোট ব্যাংকের’ ভোট কাজে লাগাতে পারলে শক্ত অবস্থানে থাকবেন তিনি। তবে হাজী মতিয়ার রহমান গাউছের বয়সের কারণে এবারই তার শেষ নির্বাচন। এজন্য সাধারণ ভোটার ও কর্মীসমর্থকরা তাকে জেতাতে খুব তোড়জোড় চালাচ্ছেন তার পক্ষে। তার অবস্থান দিন দিন আরও ভালো হচ্ছে বলে কর্মীসমর্থকদের দাবি। তবে কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে বিএনপির ‘গোপন’ ভোট ও ব্যক্তি ইমেজের কারণে থাকা ভোট এবং কাদের সিদ্দিকী প্রকাশ্যে প্রচারণায় থাকায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন তিনি। কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীকে নির্বাচনি মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে এবারের নির্বাচনের সমীকরণ ভিন্ন। এই তিনজন প্রার্থীই শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। ফলে তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ফলে নির্বাচনি যুদ্ধে অল্প ভোটের ব্যবধানে জয় হবে বিজয়ী প্রার্থীর। এমনটাই ধারণা করছেন সাধারণ ভোটার ও সচেতন মহল। 


    অপরদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদত হোসেন খান ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন লাভলু চেয়ার দখলে জোড় চেষ্টা চালাচ্ছেন। নিজেদেরকে আরও শক্ত অবস্থানে নিতে রাত-দিন কাজ করছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভোট প্রত্যাশায়। তবে সালাউদ্দিন লাভলু ঋণ খেলাপির কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় বেশ ধাক্কা খেয়েছেন তিনি। শেষ সময়ে এসে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। তবে মাঠ গোছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। শাহাদত হোসেন খান উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান থাকার কারণে বেশ পরিচিতি রয়েছে পুরো উপজেলাজুড়ে। এজন্য সালাউদ্দিন লাভলুর চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। নিজেকে মূল প্রতিদ্বন্দি¦ হিসেবে শক্ত অবস্থানে নিতে জোড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শাহাদত হোসেন খান। 



    এদিকে, নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ‘সাদা’ মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত বাসাইল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম শহীদুল ইসলাম শক্ত অবস্থানে রয়েছেন।


    উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে বাসাইল উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫১ হাজার ৮৩০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৫ হাজার ৬৩১ জন ও নারী ভোটার ৭৬ হাজার ১৯৮জন। এছাড়াও একজন হিজড়া ভোটার রয়েছে। এবার উপজেলার ৫৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। 


    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728