বুয়েটে চান্স দারিদ্রতা হার মানাতে পারেনি আল আমীনকে !
তাইবুর রহমান, সখীপুর:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আল আমীন । বাবা আজিজ মিয়া ভ্যান চালিয়ে সন্তানকে পড়াশোনা করান। 
মা
 হারা দিনমজুর বাবার সন্তান আল আমীন পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে তার 
স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যলয়ে (বুয়েট)। সে মা 
নামক শব্দটির সাথে ভালো ভাবে পরিচিত হওয়ার আগেই তার মা হারায় । তখন তার 
বয়স মাত্র আট। ছোট বেলা থেকেই আল আমীন ছিল অত্যন্ত পরিশ্রমী। পড়ালেখায় বেশ
 মনযোগী হওয়ায় বাবা-দাদা তাকে কোনো কাজ করতে দেয়নি। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে 
সংসারের চাহিদা পূরণ করতেন আল আমীনের বাবা ও দাদা। তবে দারিদ্রতা যেন কখনো 
পড়াশোনার সামনে প্রতিবন্ধকতা হয়ে না দাঁড়ায় এ জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন 
তাঁরা
উপজেলার কচুয়া 
গ্রামের আজিজ মিয়ার সন্তান আল আমীন । কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে 
এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৭২ পেয়ে এইচএসসিত সরকারি মুজিব কলেজ থেকে জিপিএ-৫ 
পেয়েছে। সে এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যলয় (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ 
পেয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় ১০২০তম স্থান অর্জন করে আল আমীন।
এছাড়াও
 আল আমীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের মধ্যে ১৫ তম স্থান এবং 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৮৭২তম স্থান এবং গুচ্ছতে ১৫৭ তম স্থান অর্জন করে।
আল
 আমীন  বলেন, আমার বাবা দাদা ভ্যান চালিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালান এমন 
একটি পরিবার থেকে পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য। আমার বয়স যখন আট বছর তখনই 
আমার মা মারা যান আমার বাবা, দাদা-দাদী আমাকে পড়াশোনায় সব সময় উৎসাহ দিত। 
ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, তারা আমাদের ভালো রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম 
করছেন। একজন দক্ষ প্রকৌশলী হয়ে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি দেশের সেবা করতে
 চায় আল আমীন।
আল আমীনের 
দাদা নাজিমউদ্দীন বলেন, আল আমীনের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালিয়ে 
তার পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। বয়স হয়েছে এখন ভ্যান গাড়ি চালিয়ে যা পাই তা 
দিয়ে পেট চলে না। নাতিকে কি ভাবে পড়াবো। তিনি আল আমীনের জন্য সবার কাছে 
দোয়া চায়।
আল আমীনের বাবা
 আজিজ মিয়া বলেন, আমি ভ্যান চালিয়ে কোন ভাবে সংসার চালাই। টাকার অভাবে 
ছেলেকে ভালো কোন কোচিংতো দূরের কথা প্রাইভেটও পড়াতে পারিনি। সে নিজে নিজে 
পড়াশোনা করেই বুয়েটেসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। তার ছেলের 
জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
 উপজেলা
 নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফারজানা আলম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ 
থেকে তাকে অভিনন্দন জানাই। আল আমীন একজন নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী 
সন্তান। সখীপুর উপজেলা প্রশাসন সব সময় তার পাশে থেকে সহায়তা করবে।

 
 
 
 
 
 
No comments