Sunday, September 24, 2023

ভূঞাপুরে বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষককে বহিস্কার

আব্দুর রহীহ মিঞা, ভূঞাপুরে:

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দায়িত্ব অবহেলা ও অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেনকে বহিস্কার করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে ওই শিক্ষককে স্থায়ী বহিস্কারের জন্য শিক্ষা বোর্ড বরাবর চিঠিপত্র পাঠানো হয়েছে।


 
এদিকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ওই শিক্ষকের পক্ষে বহিরাগতরা বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোরপূর্বক মানববন্ধন, হুমকি ও লাঞ্চিত করার অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদার গত ২০২০ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত। পরবর্তিতে দায়িত্ব অবহেলা ও অসদাচারন, বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, ২৬ মার্চ পালনে অস্বীকৃতির অভিযোগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিতে দাতা সদস্য আব্দুল হালিম মিঞাকে প্রধান করে শিক্ষক প্রতিনিধি সোহাগ খান ও অভিভাবক প্রতিনিধি মো. ইব্রাহীমকে সদস্য করা হয়। পরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলোর সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রথম পর্যায়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর তাকে কেন স্থায়ী বহিস্কার করা হবে মর্মে জবাব চেয়ে নোটিশ নেয়া হয়। কিন্তু ওই শিক্ষক সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে উল্টো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনী নোটিশ প্রদান করেন। এছাড়া সম্প্রতি বহিরাগতদের দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষকদের লাঞ্চিত ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোরপূর্বক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করার অভিযোগ আছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, শিক্ষক লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে সেই অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। যেহেতু অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়েছে তাই তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া ওই শিক্ষক একতরফাভাবে চলতে চায়। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হওয়ায় প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে তেমন ভাল আচরণ করেন না।

বহিস্কৃত বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন তালুকদার বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা। চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ আনায় উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে।


বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান বলেন, জাতীয় অনুষ্ঠান ২৬ মার্চ বিদ্যালয়ে পালন করার সময় তিনি অসহযোগিতা করেছেন। এছাড়া তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এরপ্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। এরআগে তাকে সতর্ক করা হয়েছিল কিন্তু তিনি পরিবর্তন হননি। উল্টো আইনী নোটিশ দিয়ে মামলা করার ভয় দেখিয়েছেন। স্থায়ী বহিস্কারের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম লোটন বলেন, বহিস্কৃত সহকারি প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন বহিরাগতদের নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেছেন মানববন্ধন করাতে। এসময় শিক্ষকদের লাঞ্চিত করেছেন। এই ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় বহিস্কার করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মনিরুজ্জামান খান বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিস্কার করার জন্য অর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে।


Akota Clinik

শেয়ার করুন

0 coment rios: